৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের (প্রাথমিকের শিক্ষার্থী) করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শিশুদের টিকা দান শুরু হয়, চলবে একটানা বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

ঢাকার ২১ কেন্দ্রসহ সারাদেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের ৫৫টি জোন ও ৪৬৫টি ওয়ার্ডে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের আগামী ১৪ দিন দেওয়া হবে টিকা।

পর্যায়ক্রমে দেশের সব জায়গায় শুরু হবে শিশুদের টিকা দেওয়ার এ কার্যক্রম।

করোনা প্রতিরোধে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজারের বিশেষ টিকা দেওয়া হবে।

৩০ জুলাই শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ফাইজারের ১৫ লাখ ২ হাজার ৪০০ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। ইতোমধ্যে টিকা দেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কর্তৃক শিশুদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম কর্মপরিকল্পনায় এ তথ্য উল্লেখ করা হয়।

এতে বলা হয়, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকার দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে ২৫ আগস্ট থেকে ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড-১৯ টিকাদানের আওতায় আনতে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে এ শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে। পরে জেলা, উপজেলা ও পৌরসভাসমূহের স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে এ টিকা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে শিশুদের জন্য প্রথম পর্যায়ে ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে।

টিকাদান লক্ষ্যমাত্রা

১. সারাদেশের প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ ৫-১১ বছর বয়সী শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২. ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী ১৪ দিনব্যাপী ১২টি সিটি কর্পোরেশনে ৫৫টি জোন ও ৪৬৫টি ওয়ার্ড এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
৩. প্রতিদিন ১ হাজার ৮৬০টি টিকাদান টিম কাজ করবে।
৪. ২৫ আগস্ট ১২টি সিটি করপোরেশনের ১৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

টিকার ধরন

১. শিশুদের উপযোগী ফাইজারের টিকা।
২. ডোজের সংখ্যা- ২
৩. ডোজের পরিমাণ ০.২ এমএল
৪. প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান- ৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিন

টিকাদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন
১. সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে ৫-১১ বছর বয়সসীমার শিশুদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ১৭ ডিজিটের ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
২. যে শিশুদের জন্ম সনদপত্র নেই, তাদের অভিভাবকরা জন্ম সনদপত্র সংগ্রহ করে রেজিস্ট্রেশন করবেন।
৩. বিদেশি পাসপোর্টধারী শিশুদের সুরক্ষা ওয়েবপোর্টাল বা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার পূর্বে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নির্ধারিত ‘এক্সেল ছকে’ তথ্য দিতে করতে হবে।

কীভাবে টিকা পাবেন

কোভিড-১৯ টিকা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে নিজ নিজ স্কুলে ও পরবর্তীতে কমিউনিটি পর্যায়ে (স্কুল বহির্ভূত শিশু) নিকটস্থ কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রসমূহ, আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তরা গার্লস হাই স্কুল, পল্লবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেনপাড়া পর্বতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমতলী স্টাফ ওয়েলফেয়ার বিদ্যালয়, মহাখালী আব্দুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী ইউসুফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিশলয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটমলি হোম বালিকা বিদ্যালয়, কুর্মিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণখান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফায়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুমনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রসমূহ, নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গভবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিলগাঁওঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজিমপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, করাতিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এর আগে, ১১ আগস্ট দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে শিশুদের টিকা পরীক্ষামূলক টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

কলমকথা/এমএনহাসান